আজ ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

স্বাধীনতার বিপক্ষে বনাম স্বাধীনতার পক্ষের জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা

রেজাউল হাবিব রেজা

৩৬৫দিনে বছর। এসব দিনের সবগুলো দিন একরকম নয়। আবার সব মাসও এক রকম নয়। কোনো কোনো মাস আমাদেরকে চেতনা যোগায়।  কোনো কোনো দিন আমাদেরকে ইতিহাসের দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে তা অনুধাবন করার শিক্ষা দেয়।  সেইসব চেতনার মাসসমূহের মধ্যে একটি মাস হলো ডিসেম্বর মাস। এ মাসের দিনক্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলো ১৬ডিসেম্বর। অনুরূপভাবে আরেকটি চেতনার মাস হলো ফেব্রুয়ারির মাস। যার চেতনার দিনক্ষণ হলো ২১শে ফেব্রুয়ারি।  সেইভাবে মার্চ মাসটিও  আমাদের চেতনা মাস। এ মাসের চেতনা পরিগ্রহ করার দিনক্ষণ হলো ২৫ ও ২৬ মার্চ। আর ১৫আগষ্ট তো আছেই ! যা আমাদের জাতীয় জীবনের শোককে শক্তিতে পরিণত করার এক যুগসন্ধিক্ষণ বটে।

এসব গুরুত্বপূর্ণ মাস ও দিবসসমূহ যারা কর্মসূচি পালন করেন তাদের উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি, আন্তরিকতা দেখেই প্রতীয়মান হয় যে তারা কতটুকু স্বাধীনতার পক্ষের বা স্বাধীনতার বিপক্ষের। একটি বাস্তব চিত্র প্রদর্শন করলেই তার তারতম্য  বুঝা যাবে।  যেমন ধরুন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা নামের একটি সংগঠন। যারা এ সংগঠনে  স্বাধীনতার বিপক্ষের কাজ করছে তাদের নমুনা নিম্নরূপ।

আর যারা স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করছে তাদের মনোভাব  নিম্নের চিত্রে দেখুন।  এসব চিত্রই প্রমান করে ওরা কোন কোন চেতনার লোক।

উপরোল্লেখিত দু’টো সংগঠনের  স্বাধীনতার প্রশ্নে বিপরীতমুখি অবস্থানের মতো আরো বহু সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এ দুটো সংগঠন সহজেই অনুমেয়। জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার যে অংশটি জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে ওঠেছে আমি সেই অংশটিকেই স্বাধীনতাবিরোধী বলে সম্বোধন করতে চাই। যার নেতৃত্বে রয়েছে আলতাফ হোসেন নামের  এক সিনিয়র সাংবাদিক। আর অপর অংশটির নেতৃত্ব যিনি রয়েছেন তিনি হলেন লায়ন মোঃ নূর ইসলাম।  

আলতাফ হোসেনের মোটিভ বুঝতে শুধু  চিত্র নয় বাস্তবে এর প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেদক নিজেই। 

আলতাফ হোসেন দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ ছিলেন। আর লায়ন মোঃ নূর ইসলাম  দৈনিক সকালের সময়ের একজন কর্মকর্তা। 

আলতাফ হোসেন এ উপমহাদেশের প্রখ্যাত চক্ষু ডাক্তার আবদুল আলীমের খুনি মাওলানা মান্নানের সাথে সম্পর্ক ছিল হার্টের মতো। যার সম্পর্কের বদৌলতে আলতাফ হোসেন দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান। আর সাংবাদিক সংস্থার অপর অংশের লায়ন নূর ইসলাম  হলেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এক সিপাহসালার। মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের এক আইকন। প্রতিবেদক নিজে এর প্রত্যক্ষ সাক্ষী । 

“আমি যখন খুনি রাজাকারদের বিরুদ্ধে কলমযুদ্ধ চালাই, তখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংবাদিক সংস্থার নেতা  লায়ন মোঃ নূর ইসলাম  আমাকে সাহস দেন। কাধেঁ কাঁধ মিলিয়ে আমার সাথে রাজাকারদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে দাঁড়ান। অপরপক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী আলতাফ হোসেনের কাছে রাজাকারদের বিপক্ষে সাহায্য প্রার্থনা করলে তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তোমার কী খেয়ে ধেয়ে আর কোনো কাজ নেই? এ কথা বলেই তিনি ক্ষান্ত নন, তিনি তার  এক প্রেসসচিবের নাম স্বাক্ষর জাল করে আমাকে অনৈতিক বহিস্করাদেশ দেন। কারণ আমি কেন খুনি রাজাকার নিয়ে লিখি?”

  • এই স্বাধীনতাবিরোধী আলতাফ হোসেন পাকিস্তান আমলে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় সিনিয়র স্টাফ হিসেবে কর্মরত থেকে ১৯৭১সনের ১৬ই ডিসেম্বর মাসের ৩১তারিখ পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষে জনমত সংগঠন গড়ে তোলার কাজে লিপ্ত ছিলেন। আর লায়ন মোঃ নূর ইসলাম দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় যুদ্ধাপরাধীদের কথা লিখে যাচ্ছেন।  আলতাফ হোসেন জাতীয় প্রেসক্লাবে তার স্বাধীনতাবিরোধী সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে পারছেন না। আর লায়ন মোঃ নূর ইসলাম তার সাংবাদিক সংস্থার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাচিত নেতাদের নিয়ে।  আলতাফ হোসেন সংগঠনের লাইসেন্স নিয়েছেন সাংবাদিকদেরকে ব্যবসায়িক পণ্যে রূপান্তরিত করতে। এজন্য তিনি বাবসায়িক রেজিষ্ট্রেশন দানকারী প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট স্টক থেকে নিবন্ধন নিয়েছেন। যার কারণে আলতাফ হোসেনের সাংবাদিক সংস্থা একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী হিসেবে গণ্য। যদিও তিনি তার সাংবাদিক সংস্থার নামে সাথে প্রাঃ লিঃ না লিখে তা গোপন করে রাখেন এবং প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। অপর দিকে স্বাধীনতার পক্ষের সাংবাদিক সংস্থার কান্ডারী লায়ন মোঃ নূর ইসলাম সাংবাদিক সংস্থার নিবন্ধনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে  বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট বা প্রেসকাউন্সিল হতে সরকারের কাছে নিবন্ধন চেয়ে আসছেন।  কারণ তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হতে কোনো সাংবাদিক প্রতিষ্ঠান বা সাংবাদিক সংগঠনের নিবন্ধন হলে জনগণ এটাকে ব্যবসায়িক সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভাববেনা। ভাববে যথার্থ সাংবাদিক সংগঠন হিসেবে। তাই সেই লক্ষে লায়ন নূর ইসলাম কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী আলতাফ হোসেনের ব্যবসায়িক একটি নিউজ এজেন্সী রয়েছে যার কোনো নিবন্ধন নেই। তার নাম হলো নিউজ সিন্ডিকেট। যা থেকে তিনি নিয়ম বহির্ভুত সাংবাদিক বানিয়ে যাচ্ছেন সরকারকে ফাঁকি দিয়ে। কার্ডবাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর লায়ন নূর ইসলামের কোনো নিউজ এজেন্সি নেই এবং কাউকে ভূয়া কার্ড দেবার প্রশ্নই আসেনা।  লায়ন মোঃ নূর ইসলাম প্রতিনিয়ত সরকারের সাথে পরামর্শ করে তার নিবন্ধিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান “ক্রেতাভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন” যাতে বৈধতার সাথে কাজ করে চলেছেন।  অপরপক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী আলতাফ হোসেন তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে আড়াল করে নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।  উপরে আপনারা দেখেছেন এই আলতাফ হোসেন কীভাবে শহীদ মিনারে তার ব্যবসায়িক সাংবাদিক সংস্থার লোকজনকে নিয়ে জুতা পায়ে তা কলঙ্কিত করেছেন !  এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট।  তাই প্রিয় দর্শকগণের প্রতি আমার অনুরোধ, আমার লেখাসমূহ আপনারা মনযোগ দিয়ে পড়বেন এবং স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষসহ যাবতীয় অসঙ্গতি দূর করতে সচেষ্ট হবেন। 

 

 

Comments are closed.

     More News Of This Category